স্বাধীনতা যুদ্ধে বিদেশী বন্ধু
২। প্রনব মুখোপাধ্যায় :- প্রথম বাঙালী হিসেবে যিনি ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতের পশ্চিম বঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামে বাংলাদেশের আশ্রয়প্রার্থী জনগণের জন্য শরনার্র্থী শিবির খুলেন। কলকাতায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী কার্যালয় চালু করেন। ভারতের মাটিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার কেন্দ্র স্থাপন করেন। অস্থায়ী সরকারের নেতৃবৃন্দের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখেন।
৩। জগজিৎ সিং অরোরা :- ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের ঝিলম জেলার অধিবাসী জগজিৎ সিং অরোরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মিত্র বাহিনীর নেতৃত্ব দেন।
৪। এডওয়ার্ড কেনেডি:- তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মার্কিন সিনেটর হিসেবে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন। তিনি আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছিলেন ভারতে শরনার্থী শিবিরে। তিনি পাকিস্তানী গণহত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন।
৫। পন্ডিত রবি শংকর ও জর্জ হ্যারিসন :- ভারতীয় বিশিষ্ট সেতারবাদক ও সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত রবি শংকর ও বৃটিশ বিটলস ব্যান্ডের উজ্জ্বল নক্ষত্র জর্জ হ্যারিসন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতা বিশ্ব নজরে নিয়ে আসেন এবং মুক্তিযুদ্ধে আর্থিক সহায়তার জন্য নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে আয়োজন করেন “কনসার্ট ফর বাংলাদেশ”।
৬। সাইমন ড্রিং:- ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গণহত্যা শুরু করলে বিদেশী সাংবাদিকগণ যেন খবর সংগ্রহ করতে না পারেন সে জন্য তাদেরকে ঢাকা ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে আটকে রাখে। কিন্তু সাইমন ড্রিং হোটেলের মধ্যে গোপনে লুকিয়ে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২৫ মার্চের গণহত্যার খবর ও ছবি সংগ্রহ করেন ‘ট্যাংকশ ক্রাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’ শিরোনামে টেলিগ্রাফ পত্রিকায় খবর প্রকাশ করলে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাকে পাকিস্তান সরকার দেশ থেকে বের করে দিলে পড়ে তিনি ইংল্যান্ড থেকে ভারতে এসে ১৬ ডিসেম্বর ভারতীয় ট্যাংকে চড়ে বাংলাদেশে আসেন। যেন তিনিও একজন বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধা।
৭। ডবিøউ এ এস ওডারল্যান্ড :- তিনি ডাচ-অষ্ট্রেলিয়ান অবসর প্রাপ্ত কমান্ডো অফিসার ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি গাজীপুরে বাটা সু কোম্পানীর ম্যানেজার ছিলেন। তিনি বাটা কোম্পানীর ভেতরে গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেন। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে বীরপ্রতীক সম্মানে ভূষিত করেন।
৮। অ্যান্থনি মাসকারেন হাস:- তিনি ১৯৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশে সংগঠিত গণহত্যা ও অন্যান্য ঘটনা তার লেখনির মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত করেন। তিনি গণহত্যা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বই লিখেন-ঞযব জধঢ়ব ড়ভ ইধহমষধফবংয-১৯৭২, ইধহমষধফবংয অ খবমধপু ড়ভ ইষড়ড়ফ-১৯৮৬.
৯। আরউইন অ্যালেন গিন্সবার্গ :- তিনি ১৯৭১ সালে গণহত্যার ভয়াবহতার কথা শুনে ভারতে আসেন এবং যশোর সীমান্তে শরনার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি কবিতা লেখেন ‘ সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। কবিতাটিকে তার বন্ধু বব ডিলানের সাথে যোগাযোগ করে গানে রূপান্তর করে বাংলাদেশের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেন।
১০। আন্দ্রেই আন্দ্রেভিচ গ্রোমিকো : তিনি রাশিয়ান কূটনীতিবিদ। বাংলাদেে শর স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশের পক্ষে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে জোরালো সমর্থন আদায়ে জোর তৎপর ছিলেন।
১১। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো : আর্জেন্টিনার লেখিকা ও সাহিত্যিক এই মহিলা আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য পাঠানোর দাবি জানিয়েছিলেন। আশি- উর্দ্ধ এই মহিলা বাংলাদেশের সমর্থনে রাজধানী বুয়েন্স আইরিশে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।